![]() |
ওয়েব নিউজ |
সম্প্রতি একটি জাতীয় টেলিভিশনের জনপ্রিয় টকশোতে অংশ নিয়ে আলোচনায় ঝড় তোলেন বিএনপির ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা ও জামায়াত-সমর্থিত আইনজীবী এডভোকেট শিশির মনির। ড. ইউনূস নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের সাফল্য-বিফলতা নিয়ে এই দুই রাজনীতিকের পাল্টাপাল্টি বক্তব্যে টকশোটি মুহূর্তেই হয়ে ওঠে রাজনৈতিক বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু।
ব্যারিস্টার রুমিনের অভিযোগ: ‘ব্যর্থ রাষ্ট্রনায়ক ড. ইউনূস’আলোচনার শুরুতেই ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেন, “বিগত ৯ মাসে ড. ইউনূসের নেতৃত্বে কোনো একটি ক্ষেত্রেও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি। তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশ এক ভয়াবহ নীতি সংকটে পড়েছে। সরকার পরিচালনায় কোনো দিকনির্দেশনা নেই, নেই কোনো ইতিবাচক কাজ।” তিনি আরও দাবি করেন, “এই সরকার দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরতে ব্যর্থ, বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে ব্যর্থ, এমনকি সাধারণ মানুষের মৌলিক চাহিদাও মেটাতে পারেনি।”
শিশির মনিরের পাল্টা জবাব: ‘তথ্যনির্ভর চপেটাঘাত’ পরবর্তীতে ফ্লোরে এসে এডভোকেট শিশির মনির ব্যারিস্টার রুমিনের বক্তব্যের বিরুদ্ধে ধারাবাহিকভাবে জবাব দিতে থাকেন। তিনি বলেন, “ব্যারিস্টার রুমিন হয় অন্ধ, নয়তো উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সত্য গোপন করছেন। এই সরকারের আমলেই তারেক রহমান ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় খালাস পেয়েছেন। বেগম জিয়ার বিরুদ্ধে মামলাগুলোর নিষ্পত্তি হয়েছে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায়, এবং তাঁকে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগও দেওয়া হয়েছে।”
শিশির মনির আরও বলেন, “রিজার্ভ ব্যবস্থাপনা, বৈদেশিক লেনদেন নিয়ন্ত্রণ, পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনা, সরাসরি পণ্য রপ্তানির উদ্যোগ, ট্রাইব্যুনাল মামলার নিষ্পত্তি এসবই প্রমাণ করে যে সরকার অকার্যকর নয়, বরং বহুদিন পরে বাংলাদেশ একটি গঠনমূলক প্রশাসনিক দৃষ্টান্ত দেখছে।”
'ভুল রাজনীতি'র সমালোচনা ও ভবিষ্যতের ইঙ্গিত বক্তব্যের একপর্যায়ে শিশির মনির বলেন, “যে পরিমাণ নির্লজ্জতা ও অকৃতজ্ঞতা নিয়ে রুমিনরা কথা বলছেন, তা রাজনীতির জন্য বিপজ্জনক। জনগণ একদিন আদালতে ডিম নিক্ষেপ করেই তাদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করবে।” একইসাথে তিনি ইঙ্গিত দেন ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনের দিকেও “ঢাকার রাজনীতিতে ইশরাকের একটা গ্রহণযোগ্যতা ছিল, যেটা তিনি নিজের ভুল রাজনীতির জন্যই হারাচ্ছেন। নির্বাচন হলে চোখ বন্ধ করেও মেয়র হতেন তিনি।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ধরনের বিতর্ক একদিকে যেমন গণতান্ত্রিক মত প্রকাশের অংশ, অন্যদিকে তা রাজনৈতিক বিভাজন ও ঘৃণারও প্রতিফলন ঘটায়। এক পক্ষের চরম সমালোচনা ও অপর পক্ষের আত্মতুষ্টি দুটোই দেশের দীর্ঘমেয়াদি রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।
'ভুল রাজনীতির বয়ান' কেবল একটি টকশোর প্রতিধ্বনি নয়, বরং দেশের ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের দর্শন ও রাজনৈতিক চেতনার পরিচায়ক। সমালোচনার গতি যতই তীব্র হোক, দেশকে এগিয়ে নিতে প্রয়োজন তথ্যনির্ভর বিশ্লেষণ, কৃতিত্বের স্বীকৃতি এবং ব্যর্থতার স্বচ্ছ মূল্যায়ন।