![]() |
ওয়েব নিউজ |
ফ্রান্স সরকার নাগরিকত্ব ও অভিবাসন নীতিমালায় বড় ধরনের পরিবর্তন এনেছে। নতুন আইন অনুযায়ী, ভাষা দক্ষতা, আর্থিক স্বনির্ভরতা এবং জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের ক্ষেত্রে কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। এই আইন ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হওয়ার কথা থাকলেও চলতি বছরের জুলাই থেকেই কিছু অঞ্চলে পরীক্ষামূলকভাবে বাস্তবায়ন শুরু হতে পারে।
নাগরিকত্ব (Naturalisation) পাওয়ার জন্য এখন B2 স্তরের ফরাসি ভাষা দক্ষতা থাকতে হবে। আগে B1 স্তরেই আবেদন করা যেত। ১০ বছরের রেসিডেন্স কার্ড পেতে লাগবে B1 এবং দীর্ঘমেয়াদি রেসিডেন্স কার্ডের জন্য লাগবে A2 স্তরের ভাষাজ্ঞান।
নাগরিকত্ব বা রেসিডেন্স অনুমতির জন্য প্রার্থীকে আর্থিকভাবে স্বনির্ভর হতে হবে। এই শর্তে বলা হয়েছে। প্রার্থীর ফ্রান্সে পাঁচ বছর বসবাস করতে হবে তার বার্ষিক আয় হতে হবে কমপক্ষে ১৫/১৭ হাজার ইউরো। ১.আবেদনের পূর্বে চাকরির ধরন হিসেবে থাকতে হবে অন্তত এক বছরের পুরোনো সিডিআই চাকরির স্থায়ী চুক্তি। ২. ধারাবাহিকভাবে ২৪ মাস ধরে সিডিডি চুক্তিভিত্তিক চাকরি প্রমাণপত্র।
আবেদনকারীর আয় ফ্রান্স থেকে আসতে হবে এবং সামাজিক ভাতা গ্রহণযোগ্য নয় থাকতে হবে ব্যক্তিগত উপার্জন । যাঁরা শুধু ভাতা বা বিদেশি ইনকামে নির্ভর করেন, তাঁদের জন্য ঝুঁকি বেশি। যাঁরা অসুস্থ বা প্রতিবন্ধী, তাঁদের ক্ষেত্রে এই শর্ত কিছুটা শিথিলযোগ্য।
ওভারসিজ অঞ্চল মায়োতে-তে জন্মসূত্রে নাগরিকত্বে বড় পরিবর্তন আনা হয়েছে। এখন নাগরিকত্ব পেতে শিশুর উভয় পিতামাতারই অন্তত তিন বছর ফ্রান্সে বৈধভাবে বসবাসের প্রমাণ লাগবে।
মূল ভূখণ্ডেও নতুন শর্ত আরোপ করা হয়েছে ১৬ থেকে ১৮ বছর বয়সে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে হবে। পাশাপাশি, অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে দণ্ডিত ব্যক্তির আবেদন বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।
ডানপন্থী দল র্যাসেম্বলেমাঁ ন্যাশনাল (RN) আরও কড়া প্রস্তাব এনেছে। তারা জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব (jus soli) সম্পূর্ণভাবে বাতিল, দ্বৈত নাগরিকত্বে সীমাবদ্ধতা এবং “জাতীয় অগ্রাধিকার”-এর আওতায় ফরাসি নাগরিকদের চাকরি ও সুযোগ-সুবিধায় অগ্রাধিকার দেওয়ার দাবি তুলেছে।
এই প্রস্তাব নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র বিতর্ক চলছে। সরকার পক্ষ বলছে, এসব পরিবর্তন সমাজের সংহতি রক্ষায় সহায়ক হবে। তবে সমালোচকেরা মনে করছেন, এর ফলে অভিবাসীদের প্রতি বৈষম্য বাড়বে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, অভিবাসীদের জন্য ভাষা দক্ষতা বাড়ানো এবং বৈধ রেসিডেন্স ও আয়ের সঠিক প্রমাণপত্র প্রস্তুত রাখাই এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ফ্রান্সে যারা নাগরিকত্ব বা স্থায়ী বসবাসের চিন্তা করছেন, তাঁদের এখন থেকেই নতুন নিয়মের আলোকে প্রস্তুতি নিতে হবে।