![]() |
ওয়েব নিউজ |
ফ্রান্সজুড়ে একযোগে কয়েকটি কারাগারে সংঘটিত হামলা দেশজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। গত ১৩ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া এই হামলাগুলিতে আগুন দেওয়া, গুলিবর্ষণ এবং হুমকি প্রদানের মতো ঘটনাও ঘটেছে। দক্ষিণ ফ্রান্সের তুলন-লা-ফারলেদে কারাগারে কালাশনিকভ রাইফেল দিয়ে গুলি চালানো হয়। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে কারা কর্মকর্তাদের যানবাহনে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
প্রথমে এই হামলার পেছনে উগ্রপন্থী অ্যানার্কিস্ট গোষ্ঠীর হাত রয়েছে বলে ধারণা করা হলেও, তদন্তে এখন উঠে আসছে একটি সংগঠিত মাদক পাচার চক্রের নাম। তদন্তে সংশ্লিষ্ট রয়েছে ফরাসি জাতীয় সন্ত্রাসবিরোধী প্রসিকিউটর অফিস ও নিরাপত্তা সংস্থা DGSI।
বিশেষ নজরে এসেছে “ড্রোয়া দে প্রিজোনিয়ে ফ্রঁসেজ (DDPF)” নামক একটি টেলিগ্রাম চ্যানেল। এই চ্যানেল থেকে কারা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে হুমকিমূলক বার্তা প্রকাশ করা হয়েছে, যদিও তারা হামলার দায় স্বীকার করেনি।
ফরাসি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরাল্ড ডারমানিন এক টুইট বার্তায় বলেছেন, “এই হামলাগুলো আমাদের প্রজাতন্ত্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার শামিল। সরকার আত্মসমর্পণ করবে না।” তিনি এসব ঘটনাকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড হিসেবে চিহ্নিত করার আহ্বান জানিয়েছেন।
সরকারের তথ্য অনুযায়ী, এই হামলাগুলোর অন্যতম কারণ হতে পারে সম্প্রতি ফ্রান্সে গৃহীত মাদকবিরোধী কঠোর পদক্ষেপ। সরকার ঘোষণা দিয়েছে, দেশের শীর্ষ ১০০ মাদক পাচারকারীকে একটি নতুন উচ্চ-নিরাপত্তার কারাগারে স্থানান্তর করা হবে, যাতে তারা জেল থেকেই তাদের নেটওয়ার্ক পরিচালনা না করতে পারে।
এই ঘটনার পর, ফ্রান্সের কারাগারগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা পুনর্মূল্যায়ন শুরু হয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত বাহিনী। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মাদক চক্র এবং সংশ্লিষ্ট সন্ত্রাসী তৎপরতা দমন করতে যা যা প্রয়োজন, সব কিছুই করা হবে।
এই হামলার ধরণ, সময় ও উদ্দেশ্য ফ্রান্সে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জন্য এক নতুন ধরনের চ্যালেঞ্জ। একই সঙ্গে এটি মাদক পাচার চক্রের প্রভাব এবং তাদের সংগঠিত ক্ষমতারও একটি স্পষ্ট বার্তা।
সূত্র: লে মঁদ, রয়টার্স, আরএফআই, উইকিপিডিয়া