![]() |
ওয়েব নিউজ |
ফ্রান্সের ডানপন্থী রাজনৈতিক অঙ্গনে বড় ধরনের আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে, কারণ জাতীয় সমাবেশ (Rassemblement National) দলের নেত্রী মারিন ল্য পেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের তহবিলের অপব্যবহারের মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। এই রায়ের ফলে তাকে ২০৩০ সাল পর্যন্ত যেকোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণের অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে, যা ২০২৭ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তার অংশগ্রহণের সম্ভাবনাকে বাতিল করে দিয়েছে।
দুর্নীতির মামলার পটভূমি: ৩১ মার্চ ২০২৫ তারিখে, প্যারিসের একটি আদালত মারিন ল্য পেন এবং তার দলের আরও ২০ জন কর্মকর্তাকে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রায় ২.৯ মিলিয়ন ইউরো তহবিল অপব্যবহারের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে। আদালতের রায় অনুযায়ী, ল্য পেনকে চার বছরের কারাদণ্ড (যার মধ্যে দুই বছর স্থগিত), ১০০,০০০ ইউরো জরিমানা এবং পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচনে অংশগ্রহণের অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞা অবিলম্বে কার্যকর হয়েছে, যদিও তিনি আপিল করেছেন ।
এই রায়ের পর থেকে ফ্রান্সজুড়ে ডানপন্থী দলগুলোর মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। ৬ এপ্রিল থেকে শুরু করে প্যারিসসহ বিভিন্ন শহরে জাতীয় সমাবেশ এবং সমমনা দলগুলোর উদ্যোগে ব্যাপক বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা রায়টিকে "রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র" এবং "গণতন্ত্রের ওপর আঘাত" হিসেবে আখ্যা দিচ্ছেন ।
প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বিচার বিভাগের স্বাধীনতা রক্ষার আহ্বান জানিয়েছেন এবং বিচারক বেনেডিক্ট ডে পার্থুইসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন, যিনি এই মামলার রায় প্রদান করেছেন । ল্য পেন রায়টিকে "রাজনৈতিক মৃত্যুদণ্ড" বলে অভিহিত করেছেন এবং তার দলীয় সভাপতি জর্দান বারডেলা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করেছেন ।
মারিন ল্য পেনের অনুপস্থিতিতে ২০২৭ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জাতীয় সমাবেশ দলের প্রার্থী হিসেবে জর্দান বারডেলা সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছেন। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ল্য পেনের জনপ্রিয়তা এবং রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা ছাড়া দলের জন্য নির্বাচনী সাফল্য অর্জন কঠিন হতে পারে ।
মারিন ল্য পেনের দণ্ড এবং নির্বাচনী অযোগ্যতা ফ্রান্সের রাজনৈতিক অঙ্গনে বড় ধরনের পরিবর্তন এনে দিয়েছে। ডানপন্থী দলগুলোর মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে, এবং আগামী নির্বাচনে এই পরিস্থিতির প্রভাব স্পষ্টভাবে দেখা যেতে পারে।